১০ উপায়ে অনলাইন থেকে ইনকাম করুন ঘরে বসেই

বর্তমান সময়ে লক্ষ লক্ষ তরুণ-তরুনী অনলাইনে তাঁদের কর্মসংস্থান করে নিয়েছে এবং এর মাধ্যমে তাঁরা তাঁদের দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে প্রতিমাসে একটি স্মার্ট ফিগার এর টাকা ইনকাম করছে।আপনি হয়ত শুনে থাকবেন যে আপনার বন্ধু সার্কেলেই কেউ চাকুরী অথবা পড়াশোনার পাশাপাশি অনলাইনে কাজ করে এক্সট্রা ইনকাম করছে।আপনিও হয়ত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে আপনিও অনলাইনে কাজ শুরু করবেন,কিন্তু কি কাজ করবেন এই সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না।এই পর্যন্ত যদি ঠিক থাকে তাহলে আপনি একদম সঠিক জায়গায় চলে এসেছেন।আজকে আমরা এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে অনলাইন থেকে আয় করার সেরা ১০ টি উপায় সম্পর্কে জানবো।উল্লেখ্য,এই আর্টিকেলে শুধুমাত্র অনলাইনের সেরা ১০ টি কাজ সম্পর্কে আলোচনা করা হবে।কোন কাজ কিভাবে করতে হবে সেই সম্পর্কে কোন প্রকার আলোচনা করা হবে না।এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন অনলাইন মার্কেটপ্লেসে কোন কাজ গুলো সেরা,কোন কাজ গুলো করলে আপনি সবচাইতে বেশী টাকা করতে পারবেন। তাহলে আর দেরি কেন? চলুন শুরু করা যাকঃ

১. ফ্রিল্যান্সিং থেকে উপার্জন:

ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্মে আপনি দুইভাবে কাজ করতে পারেন। Upwork, Freelancer প্ল্যাটফর্মে আপনাকে ক্লায়েন্টের প্রজেক্ট দেখে বিড করে কাজ পেতে হবে, আর Fiverr ও People Per Hour মতো সাইটে আপনি প্রজেক্ট দেখে বিড করার পাশাপাশি আপনার সার্ভিস গুলো প্রাইস সেট করে তুলে রাখতে পারেন। কোন ক্লায়েন্টের আপনার সার্ভিস পছন্দ হলে আপনাকে ম্যাসেজ পাঠাবে বা সরাসরি অর্ডার করে বসবে। অর্ডার ভালোভাবে সময়ের মধ্যে ডেলিভারি করতে পারলে ক্লায়েন্ট আপনার সার্ভিসের রিভিউ দিয়ে কমপ্লিট হিসাবে অর্ডারটি ক্লোজ করবে। কাজ ক্লোজ করার ১৫ দিনের মধ্যেই আপনি আপনার কাজ কমপ্লিটের টাকাটি পেওনিওয় বা অন্য পেমেন্ট মেথডের মাধ্যমে বাংলাদেশের একাউন্টে ট্রান্সফার করতে পারবেন।

 

২. ইউটিউব থেকে ইনকাম:

অনলাইনে আয় করার আরও একটি জনপ্রিয় উপায় হল গুগল এর ভিডিও দেখার ওয়েবসাইট ইউটিউবে ভিডিও প্রকাশ করে আয়।ইউটিউব থেকে আয় করার জন্য প্রথমে আপনাকে ভিডিও তৈরি করতে হবে।ভিডিও গুলো অবশ্যই শিক্ষণীয় এবং মজাদার হতে হবে।অন্য কারও ভিডিও কপি করে ইউটিউবে পাবলিশ করা যাবে না।আপনার ভিডিও এবং আপনার ইউটিউব চ্যানেল ইউটিউব এর সকল শর্তাবলী পুরন করলে আপনি আপনার ভিডিও তে গুগল অ্যাডসেন্স এর মাধ্যমে বজ্ঞাপন দেখিয়ে ভালো পরিমান টাকা ইউটিউব থেকে আয় করতে পারবেন।ভিডিও তৈরি করার জন্য আপনি ক্যামেরা অথবা কম্পিউটার এর স্ক্রিন রেকর্ডার ব্যাবহার করতে পারেন।

 

 

৩. ব্লগ সাইট থেকে অনলাইন ইনকাম:

Blogging হচ্ছে এমন একটি উপায় যার মাধ্যমে আপনি অনলাইন থেকে ভাল উপার্জন করতে পারেন। ব্লগিং মূলত এক প্রকার ওয়েবসাইট যা আপনি blogger ব্যবহার করে অথবা WordPress ব্যবহার করে ব্লগ বানাতে পারবেন। ব্লগ ওয়েবসাইট দুই ভাবে বানাতে পারেন, ব্যক্তিগত এবং সোস্যাল। ব্যক্তিগত ব্লগে শুধু আপনি আপনার জ্ঞ্যান বা আইডিয়া গুলো লিখে পাঠকদের কাছে তুলে ধরতে পারবেন। আর সোশ্যাল ব্লগের মাধ্যমে যে কোন ইউজার লগিন করে তাদের নিজস্ব জ্ঞ্যান বা আইডিয়া গুলো আপনার ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রকাশ করতে পারবে। লেখা যত বেশি হবে, পাঠকের সংখ্যা তত বেশি বাড়বে এটাই স্বাভাবিক। সুতারাং পাঠকের সংখ্যা যত বেশি হবে আপনার ওয়েবসাইটের রেংকিং এবং ট্রাফিক বেশি হবে। ট্রাফিক যত বেশি হবে তত বেশি উপার্জন করতে পারবেন। ব্লগিং করা সহজ তবে, আপনাকে খানিকটা ধৈর্য ধরে কাজ করে যেতে হবে।

 

৪. আর্টিকেল লিখে অনলাইন থেকে আয়:

অনলাইনে যত রকম কাজ আছে এর মধ্য সবচাইতে বেশী চাহিদা হল আর্টিকেল রাইটিং এর।কারন আপনি অনলাইনে যে কোন বিজনেস পরিচালনা করতে যান না কেন আর্টিকেল (কন্টেন্ট) আপনার লাগবেই।আর্টিকেল ছাড়া যেন অনলাইনের কোন কিছুর অস্থিত্ত নাই।আমরা যখন কোন ওয়েবসাইটে প্রবেশ করি তখন আমরা সুদর সুন্দর আর্টিকেল দিয়ে সেই ওয়েবসাইট সাজানো দেখি।এখানে কিন্তু সব আর্টিকেল সেই ওয়েবসাইট এর মালিক লিখে না।তাঁরা অনলাইনে বিভিন্ন রাইটার কে দিয়ে আর্টিকেল লিখে নিয়ে তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে থাকে।আর আপনি চাইলেই সেসব ওয়েবসাইটে আর্টিকেল লিখে আয় করতে পারেন।আর্টিকেল রাইটিং এর কাজের জন্য অবশ্যই আপনাকে ভালো মানের আর্টিকেল লিখতে জানতে হবে।

 

৫. ডিজিটাল প্রোডাক্ট বানিয়ে অনলাইন ইনকাম:

ধরুন আপনি ভালো ছবি তুলতে পারেন, আপনার পিসি ঘাটলে হাজার হাজার ভালো ছবি পাওয়া যাবে। আপনার এই ছবি তোলার শখই আপনি ইনকামের মাধ্যম হিসাবে কাজে লাগাতে পারেন। কিভাবে?

ইমেইজ বাজার, শাটারস্টক, এনভাটো গ্রাফিক রিভার,  ফ্রীপিক, সহ বেশ ভালো ভালো কিছু প্ল্যাটফর্ম আছে যেখানে আপনি কন্ট্রিবিউটার হয়ে এই ধরনের ছবি তুলে রেখে দিতে পারেন। আপনার ছবি যখনই এই প্ল্যাটফর্ম গুলো থেকে কেউ কিনে নিবে তখনই আপনি প্রতি সেলের জন্য কমিশন পাবেন। তবে এই ধরনের প্ল্যাটফর্মগুলো সব ধরণের ছবি এক্সেপ্ট করে না। আপনার ছবির কোয়ালিটি, রেজুলেশন ভালো হতে হবে। তবেই এপ্রুভাল এর সম্ভাবনা অনেক বেশী বেড়ে যাবে।

ছবি ছাড়া কি আর ডিজিটাল প্রোডাক্ট সেল করা সম্ভব না?সম্ভব। ছবি ছাড়াও আপনি যদি গ্রাফিক্স ডিজাইনের কাজ পারেন, যেমন ব্যানার ডিজাইন, ফেইসবুকের পোষ্ট ডিজাইন, মোশন গ্রাফিক্স এনিমেটেড ভিডিও, কিনবা থ্রিডি মডেলিং… আপনি এই ধরণের সব প্রোডাক্টই এই ধরণের মার্কেটপ্লেসগুলোতে সেল করতে পারবেন।

 

 

৬. এফিলিয়েট মার্কেটিং: 

এফিলিয়েট মার্কেটিং হল, একজনের পণ্য কমিশনের বিনিময়ে বিক্রি করা। যেমন, ধরুন আপনি অ্যামাজনের অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করেন। তো, আপনি অ্যামাজনের একটা আইফোন এর অ্যাফিলিয়েট লিংক আপনার একজন বিদেশি পয়সাওয়ালা বন্ধুরে দিয়ে বললেন, বন্ধু এইখান থেকে কিনো। আপনার বন্ধু আপনার লিংকের মাধ্যমে গিয়ে যখন অ্যামাজন থেকে পণ্যটি কিনবে, তখন আপনি উক্ত পণ্য থেকে একটা নির্দিষ্ট পরিমান কমিশন পাবেন।

এখন চিন্তা করুন, এই কাজটি যদি ওয়েবাসাইটের মাধ্যমে করতে পারেন, তাহলে কত লাভ হবে? আপনি ওয়েবসাইটে পণ্যের রিভিও লিখলেন। তারপর আস্তে করে Buy Now এর লিংক দিয়ে দিলেন। পাঠকের পছন্দ হলে, সে ঐখানে ক্লিক করে কিনে নিল। এখন, আপনার ওয়েবসাইটে যদি প্রতিদিন ১,০০০ ভিজিটর থাক। আর এই ১ হাজারের ১০০ জনও যদি পণ্য কিনে, আর প্রতি ১০০ জনের পণ্য থেকে গড়ে ৫ ডলার করে পেলেও, ৫০০ ডলার (৪০ হাজার টাকা)। ছাত্রজীবন মানে ছাত্রীজীবনও আরকি, আর কি লাগে এ জীবনে। ছাত্রদের জন্য অনলাইনে আয় করার উপায় হিসাবে, অ্যাফিলিয়েট খুব ভাল মাধ্যম বলা যায়।

 

৭. প্রশিক্ষণ প্রদান করে অনলাইনে আয়: 

আপনি যদি গৃহ শিক্ষক হিসাবে পূর্বে কাউকে পরিয়ে থাকেন তাহলে সি অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে অনলাইনে পড়িয়ে ভালো পরিমান অর্থ আয় করতে পারেন।এর জন্য আপনাকে প্রথমে অনলাইনে শিক্ষাদান বিষয়ক জনপ্রিয় ওয়েবসাইট গুলোতে সাইন আপ করতে হবে।এর পর আপনি কোন কোন বিষয়ে পড়াতে চান তার একটা পূর্ণ তালিকা তৈরি করতে হবে।এবং এসব তথ্য দিয়ে সাইন আপ করা ওয়েবসাইট গুলোতে আপনার পার্সোনাল প্রোফাইল তৈরি করতে হবে।এছারা আপনি চাইলে নিজের একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে সেখানে আপনি আপনার স্টুডেন্টদের ক্লাস করাতে পারবেন।

৮.মোবাইল অ্যাপ থেকে ইনকাম:

আপনার যদি অ্যাপ ডেভলপ করার স্কিল থাকে তাহলে আপনি এন্ড্রয়েড বা আইফোনের জন্য অ্যাপ বানিয়েও ইনকাম করতে পারেন। প্রোডাক্টটিভিটি অ্যাপ থেকে শুরু করে ক্যালকুলেটর বা লাইফ স্টাইল অ্যাপ বানিয়েও বেশ ভালো ইনকাম জেনারেট করা সম্ভব।

 

৯. ডিজিটাল কোর্স সাবস্ক্রিপশন:

আপনি যদি কোন একটা পার্টিকুলার এড়িয়ায় দক্ষ হয়ে থাকেন তাহলে আপনি সেই দক্ষতা থেকে যেমন ফ্রিল্যান্সিং করতে পারেন, তেমনি অনলাইন কোর্স বানিয়েও তা সেল করে আয় করতে পারেন। আপনি চাইলে ওয়ার্ডপ্রেস সাইট বানিয়ে সেখানে নিজের কোর্সগুলো সেল করতে পারেন, বা কোন থার্ড পার্টি মাধ্যমে ইন্সট্রাকটর হিসাবে সাইন আপও করে কোর্স সেল করতে পারেন।

 

 

 

১০. ই-কমার্স ষ্টোর:    

অনলাইন থেকে টাকা আয়ের আরও একটি ভালো এবং অন্যতম মাধ্যম হলো ই-কমার্স। বর্তমানে মানুষজন সময়ের এতো বেশি কদর করতে শিখে গেছে যে টাকার বিনিময়ে সময় কিনতে চায়। সময় বাঁচানোর জন্য মানুষ এখন অনলাইনে নির্ভর হয়ে পড়ছে, অনলাইন থেকে তাদের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনা-কাটা করছে। বলা যায় এটি অনেকটা সৌখিনতা।

ই-কমার্স বলতে সাধারণ অর্থে অনলাইন থেকে কেনা-কাটা করাকেই বুঝে থাকি। আপনি চাইলে নিজেও একটি ওয়েবসাইট বা ফেসবুক পেজ খুলে ই-কমার্স শুরু করতে পারেন। এখানে আপনাকে বিশ্বস্ত হওয়া জরুরি একবার বিশ্বস্ত হতে পারলে আপনার ভবিষ্যৎ নিশ্চিত আলোকিত হয়ে যাবে।

এই ছিল আজকের লেখার আলোচনার বিষয়।আপনি চাইলেই উপরে আলোচিত ১০ টি কাজের আপনার পছন্দের যেকোনো একটি ব্যাবহার করে খুব সহজেই অনলাইন থেকে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।এই ১০ টি উপায় এর বাহিরে আপনার কোন কাজের ব্যাপারে জানা থাকলে অবশ্যই আমাদেরকে তা মন্তব্য করে জানাবেন।

 

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top